স্রোতে গা ভাসিয়ে দিবে না। স্রোত তোমাকে তোমার না, স্রোতের গন্তব্যে নিয়ে পৌঁছাবে। মেঘে চোখ ভাসিয়ে দিবে না। চোখ ভাসিয়ে দিলে মেঘ তোমাকে মধ্য আকাশ থেকে কিনারায় নিয়ে ছাড়বে। তোমাকে বুঝতে হবে তুমি কী চাও এবং সেইভাবে বুক চিতিয়ে বাঁচাটা শিখতে হবে।
নদীর পানি যখন দখিন দিকে বয়ে যায় তখন সমস্ত নদীর জল দলবদ্ধ ভাবে দখিন দিকেই যায়। যে বিন্দু জল উত্তরে যেতে চেয়েছিল তাকেও জলের স্রোতে দখিনেই ভেসে যেতে হয়েছে। এক বিন্দু জল সবাইকে উপেক্ষা করে স্রোতের বিপরীতে উত্তরে যেতে পারে না; মানুষও পারে না। আবার কেউ কেউ পারে। তোমাকে ' সব মানুষ' না হয়ে একটা দুটা দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী মানুষ হতে হবে।
তোমার আশে পাশের মানুষ যেভাবে চিন্তা করছে, কথা বলছে, কাজ করছে তাদের সাথে গা ভাসিয়ে দিয়ে না; তুমি তোমার সুন্দর চিন্তাটাকে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত কর যেটা একদিন সবাইকে চিন্তায় ফেলে দিবে। তুমি এমন একটা কিছু কর যেটা একদিন স্রোত সৃষ্টি করবে।
বেশিরভাগ মানুষের স্বপ্ন পাতার বাসার মত অনেক সুন্দর হয় যদিও এর ভিত্তিটা দুর্বল থাকে। সামান্য বাতাসে ছাউনি উড়ে যায় ; দু ফোঁটা বৃষ্টিতে ঘর বন্যায় ডুবে যায়।
চারপাশ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে তোমাকে আগে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অ্যালান লেকেইনের 'হাউ টু গেট কন্ট্রোল অফ ইউর টাইমস এন্ড ইওর লাইফ' বইটি পড়ে দেখতে পারো। বইটিতে জীবনের লক্ষ্য গুলোকে গুরুত্ব অনুযায়ী এ , বি , সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে কাগজে লিখে রেখে প্রত্যেকটি দিন একটা আলাদা সময় সেই কাগজে চোখ বোলাতে বলা হয়েছে।
এতে করে তুমি না চাইলেও তোমার আনকনসান্স মাইন্ড তোমাকে বার বার মনে করিয়ে দিবে, তোমার জীবনের একটা স্বপ্ন আছে এবং সেটা পূরণের জন্য তোমার কোন প্রস্তুতি নেই। মানুষ বড় বেহায়া প্রাণী ; সে স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে কিন্তু সেটা পূরণের জন্য পরিশ্রম করতে চায় না।
সবাই আসলে এখানটাতেই এসে হেরে যায়। একদম মধ্যআকাশ থেকে মেঘের মত ভেসে ভেসে কিনারায় চলে যায়।
বিখ্যাত কুস্তগীর মোহাম্মদ আলীকে একবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আপনি ব্যায়াম করার সময় একটানা কতবার পুশআপ করতে পারেন ?
জবাবে তিনি বলেছিলেন, আমি একটানা কতবার পুশআপ করতে পারি এটা কখনোই কাউন্ট ডাউন করিনা। আমি পুশআপ করতেই থাকি। করতেই থাকি। একসময় আমার শরীর ক্লান্ত হয়ে আসে। যে মুহূর্ত থেকে আমি ব্যথা অনুভব করতে শুরু করি আমি শুধু সেই মুহূর্ত থেকে কাউন্ট ডাউন করতে শুরু করি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন